"খামার সার " নাম থেকেই আমরা এই সারের ব্যাপারে কিছুটা ধারণা করতে পারি. সাধারণ ভাবে বলা যায় "খামারের আবর্জনা থেকে যে সার তৈরি করা হয় তাকে খামার সার বলে". আদর্শ খামার সারের মধ্যে ০.৩২ % নাইট্রোজেন, ০.০৫ % ফসফরাস, ০.২৫ % পটাশ, ১.২০ % ক্যালসিয়াম, এবং ০.৩৩ % মেগনেসিয়াম, বর্তমান থাকে. মাটির গঠন,খাদ্যোপাদান,জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খামার সার গুরুত্বপূর্ণ. বীজ বপনের কিছুদিন পূর্বেই খামার সার ব্যাবহার করা উচিৎ.
তৈরির পদ্ধতি :-
খামার ও বাড়ির যত আবর্জনা, লতাপাতা, আগাছা, পুকুরের পানা, সবজির খোসা, গোবর,গো-মূত্র, খড় ইত্যাদি দিয়ে এই সার তৈরি করা যায়. মাটিতে কাঁচা বা পাকা গর্ত তৈরি করা হয়, গর্তে সরাসরি রোদ বা বৃষ্টি আটকানোর জন্য উপরে ছাউনি করা হয়. গর্ত গুলির আকার জৈব সারের পরিমানের উপর নির্ভর করে তবে সাধারণত লম্বায় ১০ - ৩০ ফুট, চওড়ায় ৪.৫ - ৭.৫ ফুট ও গভীরতায় ৩ ফুট হয়. গর্তের মধ্যে প্রথমে ১ ফুট আবর্জনার স্তুপ ভর্তি করা হয় তারপর পচন ক্রিয়া দ্রুত করে জন্য আবর্জনার উপর জলে মেশানো গো-মূত্র বা ইউরিয়া ছড়িয়ে দেওয়া হয়. এই ভাবে ১ ফুট করে স্তর সাজিয়ে গর্ত ভর্তি করতে হয়. লক্ষ্য রাখতে হবে যেন শেষ স্তরটি মাটি থেকে ১.৫ - ২ ফুট উপর থাকে. কম্পোস্টের গুণগত মান বৃদ্ধি করার জন্য প্রতি স্তরে কিছু পরিমান করে সিঙ্গেল সুপার ফসফেট দেওয়া যায়. সুপার ফসফেট দিয়ে উৎপন্ন কম্পোস্টকে সুপার কম্পোস্ট বলা হয়. আবর্জনার মধ্যে যথেষ্ট রস আছে কি না সেদিকে নজর দিতে হবে, প্রয়োজন হলে জল ছিটিয়ে দিতে হবে,কম্পোস্টের স্তর জমানোর দেড় মাস পর আবর্জনার স্তুপ ওলটপালট করে দিয়ে স্তূপটি উপর দিকে ৫ সে:মি পুরু কাদামাটির প্রলেপ দেওয়া হয়. নাড়াচাড়া করে দিলে বায়ুচলাচলের ফলে পচন ক্রিয়া দ্রুত হয়.মোট ৪ মাস পর কম্পোস্ট তৈরি হয়ে যায়. গর্তের মধ্যে বর্ষার জল বা রোদ সরাসরি লাগলে সারের গুণগত মান নষ্ট হয়.
Post a Comment