Patra & Pan Crop Production
..........................কৃষকের সাথে কৃষকের পাশে

GOAT FARMING


                                     GOAT FARMING




সাধারণত ছাগল কে আমরা গরীবের গরু বলে থাকিএর দ্বারাই  ছাগলের অর্থকারী গুরুত্ব বুঝতে পারা যায়গ্রামীণ অর্থনীতিতে ছাগল পালনের গুরুত্ব অপরিসীমপ্রযুক্তিগত ভাবে ছাগল পালন করে গ্রামের গরীব মানুষেরা আর্থিক উন্নতি করতে পারেএছাড়া ব্যবসাভিত্তিক ভাবেও বহু বেকার যুবক যুবতী   স্বনির্ভর হতে পারেন.

ছাগল পালনের  সুবিধা :-
:- ছাগল পালনে মূলধন কম লাগে .
:- বাজারে ছাগলের চাহিদা প্রচুর.
 :- ছাগলের রোগ কমজায়গা কম লাগেখাবার খরচ কম লাগে,
 :- ছাগলের মাংসের দাম  চাহিদা বেশি,
 :- ছাগলে দুধ  চামড়ার চাহিদাও বাজারে কম নয়.
 :- ছাগলের গর্ভকাল মাত্র  মাস ফলে দু বছরে  বার বাচ্চা দিতে পারেপ্রতি বিয়ানে  থেকে ততোধিক বাচ্চা দেয়
:- ছাগল  মাসে প্রজন্ননে সক্ষম হয়  ১২ বছর বাঁচে.

লাভজনক ভাবে ছাগল পালনের জন্য ছাগলের সঠিক ঘর খুবই গুরুত্ব পূর্ণ

সঠিক ঘর তৈরির জন্য নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর নজর রাখা দরকার :-

 ঘর উঁচু জায়গায় হতে হবে যেন জল না জমে.
 ঘরে বাতাস চলাচল এবং পর্যাপ্ত পরিমানে পরিস্কার জলের ব্যবস্থা থাকতে হবে.
  ঘরের উঁচুতা কমপক্ষে  ফুট রাখতে হবে.
 ঘরের মেঝের চারপাশ  -  ফুট বেড়া দিয়ে রাখতে হবে.
 ঘরের মেঝে পাকা অথবা কাঠের পাটাতনের উপর করা ভালো.
 ঘরের বাইরের ফাঁকা অংশে খাবার  জলের পাত্র যেন সিমেন্টের বানানো থাকে.
 ছাগলকে ঘাস বা পাতা সবসময়  ফুট উঁচুতে ঝুলিয়ে দেওয়া ভালো.
 ঘরের ছাওনি টিন বা এসবেস্টারের হলে নিচে বাঁশের বা কাঠের পাটাতন দিয়ে সিলিং করে রাখতে হবে.

ঘরের পরিমাপ :-

  :-  মাস বয়স পর্যন্ত প্রতি বাচ্চা ছাগলকে  বর্গফুট করে জায়গা দিতে হবে.
  :-  থেকে  মাস বয়স পর্যন্ত  বর্গফুট  তারপর ১০ থেকে ১২ ফুট করে জায়গা দিতে হবে.
 :- গর্ভবতী ছাগলের জন্য  বাচ্চা হবার   মাস পর্যন্ত ১৫ বর্গফুট করে জায়গা দিতে হবে.
  :- পুরুষ ছাগলকে  মাস বয়সের পর থেকে আলাদা রাখতে হবে.
 :- গর্ভবতী ছাগল ছাড়া প্রতি ছাগলের জন্য ১০ বর্গফুট করে জায়গা দিয়ে ফার্ম করা যায়.

ছাগলের যৌন জীবন :-

  বাচ্চা ছাগল কে KID প্রজননক্ষম স্ত্রী ছাগলকে DOE এবং  প্রজননক্ষম পুরুষ ছাগলকে BULK  বলা হয়.

প্রজননক্ষম স্ত্রী ছাগল :-
১০ মাস বয়সে বাচ্চা উৎপাদনে সক্ষম হয়প্রতি ১৮ - ২১ দিন অন্তর গরম হয়গরম কাল ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা থাকলেও ১৫ থেকে ৩০ ঘন্টার মধ্যে পাল ধরানো ভালো এছাড়া গরম হবার  সময়  বার  ১৫ থেকে ৩৫ ঘন্টার মধ্য আরো  বের পাল ধরলে ভালো কাজ পাওয়া যায়ছাগলের গর্ভকাল ১৫০ দিনের হয়উন্নত প্রজাতির ছাগল  বছরে  টি বাচ্চা দেয় কিন্তু বাংলার কৃষ্ণাঙ্গ ছাগল এবং বারবারি প্রজাতির ছাগল  বছরে  বার বাচ্চা দেয় এবং একাধিক বাচ্চা দিতে পারে .

প্রজননক্ষম পুরুষ ছাগল :-
প্রায় ১৫ মাসে প্রজননক্ষম হলেও  বছরের আগেও প্রজননের কাজে না লাগানোই ভালোপ্রায় ১০ বছর প্রজনন ক্ষমতা থাকে.সপ্তাহে  বারের বেশি একটি
পুরুষ  ছাগলকে কাজে না লাগানোই ভালো.

পুরুষ ছাগল  নির্বাচন :-
 :- এক বছর বয়সের ছাগল ক্রয় করুন.
 সুস্বাস্থ  সুগঠিতশক্ত  দৃঢ় পাবোরো আকারের পাঁঠা,
SIROHI GOAT
 :- পাঁঠার মায়ের প্রতি বিয়ানের বাচ্চার পরিমান জানার চেষ্টা করুন.
 :- ঘাড়ে কেশরযুক্ত শক্তিশালী চনমনে পাঁঠা প্রজননের জন্যে ভালো,
 :- সামনের দিক ভারী  পেছনের দিক হালকা পাঁঠা ভালো,
 :- দুই অন্ডকোষ যেন পুষ্ট এবং আকার  আকৃতিতে একই হওয়া উচিত.

স্ত্রী ছাগল নির্বাচন :-
 :-  থেকে ১০ মাস বয়স হওয়া ভালো,
 :- গোলাকৃতি সুস্বাস্থের ছাগী নির্বাচন করা ভালো,
 :- লম্বা গলাগভীর বুককম চর্বিযুক্ত ছাগী নির্বাচন করা ভালো,
 :- বড়ো পালানলম্বা  মোটা বাঁট পরস্পর থেকে বেশি দূরত্বে অবস্থিত বেশি দুগ্ধবতী ছাগীর লক্ষন,
 :- নরমমোলায়েম চকচকে চামড়াযুক্ত ছাগী বেশি গ্রহণ যোগ্য.

ছাগলের খাবার :-
কথায় বলে " ছাগলে কি না খায়". ছাগল ঘাসসবজির খোসাখড়গাছের পাতা,সবই খায়বাংলার কৃষাঙ্গ ছাগল এই সব খাবার খেয়ে ভালোভাবে বাঁচে কিন্তু সিরোহীবিটলওসমানাবাদীযমুনাপাড়িইত্যাদি ছাগলের ক্ষেত্রে  ব্যবসাভিত্তিক ছাগল চাষের জন্য প্রতিদিন ৫০ - ১০০ গ্রাম দানা খাবার দিতে হবে টি ছাগল দৈনিক - কেজি পর্যন্ত ঘাস খায়.

ব্যবসাভিত্তিক ছাগল চাষের জন্য খাবার :-
 :- এক্ষেত্রে সারা বছর সবুজ ঘাসের যোগান দেওয়ার জন্য প্রতি 20 টি ছাগলের জন্য  বিঘা জমিতে ঘাসের চাষ করতে হবে.
 :- দৈনিক ছাগল পিছু - কেজি সবুজ ঘাস তৈরী করতে হবে.
 :- ছাগল কে সবসময়  ফুট উঁচুতে ঘাস ঝুলিয়ে দিতে হবে.
 :- গর্ভবতী ছাগলকে শেষ  মাস প্রতিদিন ৫০-১০০ গ্রাম দানা খাবার দিতে হবে.
:- প্রজননে ব্যবহৃত পাঁঠাকে অন্তত ৫০ গ্রাম করে দানা খাবার দিতে হবে .

পূর্ণ বয়স্ক ছাগলের দৈনিক খাদ্য তালিকা :-  
 :- খড় - ১০০ গ্রাম,
 :- সবুজ ঘাস - কেজি,
 :- দানা খাদ্য - ৫০ গ্রাম,
 :- জল -  -  লিটার,

দানা খাবারের মিশ্রণ :-

উপাদান                       শতাংশ
গমের ভূষি      -          ২৭
মুগচুর্ণি                        -          ১৫
ভুট্টা গুঁড়ো      -           ৩০
মুগের ছাটি      -           ১০
তিল/সরষে খোল         ১৫
খাদ্য লবন       -            
ভিটামিন/খনিজ লবন -  


                                                = ১০০

রোগ  প্রতিকার :-
তুলনামূলক ভাবে ছাগলের রোগব্যাধি  অনেক কম হলেও বিশেষ কয়েকটি রোগ ছাড়া গরুর প্রায় সব সব রোগ ছাগলের হয়.

 পশ্চিমবঙ্গের ছাগল চাষীদের মূল সমস্যা হলো ছাগলের কৃমিএই রোগ প্রতিকারের জন্য বর্ষার আগের  পরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কৃমির ঔষুধ খাওয়াতে হবে.
এছাড়াও বিভিন্ন সংক্রামক রোগে ছাগল আক্রান্ত  মারা যায়এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য ছাগ বসন্ত,গলা ফোলাতড়কাবজবজেএসোইত্যাদিএই সমস্ত রোগ থেকে ছাগল কে ভালো রাখতে স্থানীয় চিকিৎসকে পরামর্শ মতো টীকাকরন এর ব্যবস্থা করুন.

 বসন্ত :-
সাধারণত বসন্ত রোগের ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এক সাথে অনেক ছাগল আক্রান্ত হয়  মারা যায়বছরের যে কোনো  সময় এই রোগ দেখা গেলেও বসন্ত  শরৎ কালে এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়.

লক্ষণ :-
 :- দেহের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৬ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়.
 :- নাক দিয়ে সর্দি ঝরে.
 :- শরীরের নরম অংশে যেমন মুখ  নাকের চারপাশেপালনে জলফোস্কা দেখা যায়.
 :- বাছা ছাগলের মৃত্যুর হার বেশি.

টীকা :-
 মাস বয়সে  বারতারপর বছরে  বার করে দিতে হবে.

কৃমি :-
কৃমি আক্রান্ত ছাগলের প্রধান যখন হল দেহের তুলনায় ক্রমে পেট বড়ো হতে থাকেহজমশক্তি কমে যায় এবং পাতলা পায়খানা হয়গলার নিচে নরম থলথলে ফোলাভাব দেখা যায়রক্তশুন্যতায় ক্রমে মারা যায়.  

কৃমি প্রতিরোধের চিকিৎসার উপর ছাগল পালনের প্রধান সাফল্যতা নির্ভর করেবিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায়.

 পি.পি.আর পেস্টিডিস পেটিস-রুমিন্যান্ট :-
এটি একটি  ভাইরাস ঘটিত মারাত্মক সংক্রামক  ছোঁয়াচে রোগবছরের সবসময় হয় মৃত্যুর হার ৯৮ %



বিস্তার :-
সংস্পর্শদূষিত খাবারজল  বাতাসের মাধ্যমে খুব দ্রুত ছড়ায়.

লক্ষন :-
1 :- দেহের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়.
 :- রক্তবর্ণ চোখ হয়.
 :- সর্দি  হাঁচি হয়দুর্গন্ধ যুক্ত মোটা পুঁজযুক্ত সর্দি ঝরে.
 :- রক্ত মিশ্রিত দুর্ঘন্ধযুক্ত পাতলা পায়খানা হয়.  

টীকা :-  মাস বয়সে PPR  এর টীকা . তারপর বছরে  বার করে টীকা দিতে হবে.



No comments